অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অধিক টাকা ইনকামের উপায়
বন্ধুরা আপনারা হয়তো জানেন যে এফিলেট মার্কেটিং কি এবং আপনার হয়তো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরুও করে দিয়েছেন । কিন্তু এফিলেট মার্কেটিং শুরু করতে গিয়ে আপনি সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটাই পড়ছেন সেটা হলো আপনার প্রোডাক্ট তেমনটা বিক্রি হচ্ছে না ।
![]() |
Affiliate marketing increase Earning |
এর জন্য আপনি বিভিন্ন উপায় বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুসন্ধান করছেন । কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না । তবে চিন্তা করবেন না । আমার এই পোস্টে আমি এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে অধিক ইনকামের কিছু উপায় বলব যেগুলো দ্বারা আপনি আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ার কে এবং আপনার ইনকাম কে অধিকতর এগিয়ে নিতে পারবেন ।
প্রথমত অ্যাফলিয়েট মার্কেটিং থেকে অধিক ইনকাম এর জন্য আপনাকে জানতে হবে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? । যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য সংক্ষেপে হতে বলছি এফিলিয়েট মার্কেটিং কী?। তবে যারা জানেন তারা নিচের পেরা টি স্কিপ করে যেতে পারেন ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
আপনারা হয়তো এর আগে মার্কেটিং করেছেন তা হোক ডিজিটাল মার্কেটিং কিংবা অন্য ধরনের মার্কেটিং । সেরকমই এফিলিয়েট মার্কেটিং এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট জনসাধারণের কাছে বিক্রি করবেন এবং ঐ প্রোডাক্টের দামের কিছু অংশ ওয়েবসাইটের মালিক আপনাকে দেবে ।
ধরুন যদি কোন ওয়েবসাইট আপনাকে 10% কমিশন দেয় তাহলে আপনি যদি 100 টাকার 1 টি জিনিস বিক্রি করেন তাহলে তার বিনিময় আপনি সেখান থেকে 10 টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।
কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করবো
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে প্রথমত একটি ওয়েবসাইট চুস করতে হবে যেখান থেকে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন । বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোতে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায় ।
সেই ওয়েবসাইটগুলো ওয়েবসাইটের অ্যাফিলিয়েট পার্টনারদের দিয়ে তাদের প্রোডাক্ট গুলো সেল করে থাকে । এর মধ্যে বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো হলো দারাজ, বিডি শপ, টেন মিনিট স্কুল ইত্যাদি ।
দারাজ, বিডি শপ এগুলোর থেকে আপনারা সকল ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে এফিলেট মার্কেটিং করতে পারবেন । কিন্তু টেন মিনিট স্কুল যেটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন শিক্ষাবৃত্তিক প্ল্যাটফর্ম, সেখান থেকে আপনারা শুধু বই এবং কোর্সগুলো বিক্রি করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন ।
ওয়েবসাইট চুস করা হয়ে গেলে আপনাকে প্রথমত ওয়েব সাইটে একাউন্ট তৈরী করতে হবে । অ্যাফিলিয়েট পার্টনার হওয়ার জন্য যখন একাউন্ট ক্রিয়েট করা হয়ে যাবে তখন আপনার একাউন্ট টি রিভিউতে যাবে এবং অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটটি আপনার একাউন্টকে যখন অ্যাপ্রুভ করে দেবে তখন আপনি তাদের ওয়েবসাইটে একজন এফিলিয়েট হিসাবে জয়েন করতে পারবেন ।
যখন আপনি আফিলিয়েট পার্টনার হিসেবে জয়েন হয়ে গেলেন তখন আপনি ওই ওয়েবসাইটের যে প্রোডাক্টটি জনসাধারণের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছেন সেই প্রোডাক্ট এ ক্লিক করবেন এবং সেখান থেকে আপনাকে একটি এফিলিয়েট লিংক দেওয়া হবে । যেটি আপনি বিভিন্নভাবে শেয়ার করবেন তা হোক ফেসবুক-টুইটার কিংবা আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট । আপনার শেয়ার করা লিংক থেকে যদি কেউ ঐ প্রোডাক্টটি কেনে তবে তার পার্সেন্টেজ কিছু টাকা আপনি পেয়ে যাবেন ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব
আপনি যদি একজন নতুন এফিলিয়েট হয়ে থাকেন কিংবা অ্যাফিলিটি হিসেবে জয়েন করবেন ভাবছেন তাহলে আপনার মাথায় প্রথমে এ প্রশ্নটি আসছে যে, এফেলিয়েট মার্কেটিং থেকে কত টাকা ইনকাম করা সম্ভব । এর উত্তরে আমি বলব আপনি চাইলে প্রতিদিন ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন । এর থেকে বেশিও হতে পারে । এটা ডিপেন্ড করবে আপনার দক্ষতার উপর ।
তবে যারা নতুন, তারা প্রথমত সেরকম সেল করতে পারেনা । কিন্তু আজকে আমি আমার এই পোস্টে যে উপায় গুলো বলে দেবো সেই উপায় গুলো দিয়ে যদি কেউ কাজ করে তাহলে নতুন এফিলিয়েট হলেও তিনি 1000 থেকে 2000 টাকা দিনে নিমিষেই ইনকাম করে ফেলতে পারবে । তো বন্ধুরা এবার জেনে নেওয়া যাক কি কি উপায়ে আমরা আমাদের বিক্রি বাড়াতে পারি ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ অধিক সেল করার উপায়
প্রথমেই বলে রাখি নিচে দেওয়া উপায় গুলো মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং সেই উপায়গুলো দিয়ে কাজ করবেন । আমি 100% নিশ্চয়তা দিতে পারি, আপনি আপনার আয় কে অধিক তোর বারিয়ে নিতে পারবেন এই উপায়গুলো দ্বারা ।
1. ফেসবুক প্রোফাইল থেকে
প্রথমত আপনার যদি একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকে আপনার প্রডাক্ট গুলোকে বুষ্টিং করতে পারবেন । যদি আপনার ফেসবুক প্রোফাইল না থেকে থাকে তাহলে এখনই ফেসবুক প্রোফাইল ক্রিয়েট করে ফেলুন । এবং সেই প্রোফাইলে প্রতিদিন 50 থেকে 100 টি করে ফ্রেন্ডকে যুক্ত করতে থাকুন ।
যখন আপনার ওই প্রোফাইলে অধিক মানুষ যুক্ত হয়ে যাবে আপনার ফ্রেন্ড হিসাবে, তখন আপনি চাইলে আপনার ওই প্রোফাইল দিয়েই আপনার প্রোডাক্ট গুলো কে বুস্টিং করতে পারবেন আপনার ফেশবুক ফ্রেন্ডদের মাঝে ।
এক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন ভিডিওগুলোকে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করে সেগুলো দিয়ে লাইভ স্ট্রিম করতে পারেন । লাইভ স্ট্রিম করার ফলে আপনার প্রতিটা ফ্রেন্ডের কাছে একটি করে নোটিফিকেশন যাবে এবং সেই নোটিফিকেশন এ ক্লিক করলেই তারা আপনার লাইফটিকে দেখতে পাবে ।
আপনি আপনার লাইফের সাথে আপনার এফিলিয়েট লিংকটি দিয়ে রাখবেন । যাতে করে তারা ঐ লাইভ স্ট্রিম টি দেখে প্রোডাক্ট সম্পর্কিত তথ্যগুলো পেয়ে যাবে এবং ওই লিঙ্কে ক্লিক করে প্রডাক্ট টি কিনে ফেলবে ।
2. ফেসবুক গ্রুপ থেকে
আপনার যদি একটা ফেসবুক গ্রুপ থেকে থাকে তাহলে আপনি সেটি থেকেও আপনার প্রোডাক্ট গুলো বুস্টিং করতে পারবেন । এক্ষেত্রে আপনার গ্রুপে অবশ্যই ভালো পরিমাণের মেম্বার থাকতে হবে ।
যদি আপনার সেরকম কোনো ফেসবুক গ্রুপ না থেকে থাকে তাহলে অন্য দের কাছ থেকে গ্রুপগুলো কিনে নিতে পারেন যেগুলোতে অধিক মেম্বার যুক্ত হয়ে আছে । এবং যদি আপনি নিজস্ব ফেসবুক গ্রুপ থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং নাও করতে চান তাহলে আপনি অন্যান্য ফেসবুক গ্রুপে আপনার পোস্ট গুলো দিতে পারেন ।
এক্ষেত্রে অনেক গ্রুপ আছে যারা এফিলিয়েট লিংক সহ পোস্ট গুলোকেও এপ্রুভ করে দেয় । আপনি চাইলে সেই গ্রুপ গুলোকে খুঁজে বের করে এগুলোতে আপনার এফিলিয়েট লিঙ্ক সহ পোস্ট করতে পারেন । যাতে করে ওই গ্রুপের মেম্বাররা আপনারা লিংকে ক্লিক করে প্রডাক্ট কিনতে পারে ।
3. ফেসবুক পেজ থেকে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য সবচেয়ে বড় উপায় হলো ফেসবুক পেজ থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা । আপনার যদি একটি ফেসবুক পেজ থেকে থাকে এবং সেটাতে যদি ভাল মানের ফলোয়ার থেকে থাকে তাহলে আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক পেজ থেকে অ্যাপলেট মার্কেটিং করতে পারেন ।
যদি আপনার ফেসবুক পেজে সেরকম ভাল মানের ফলোয়ার না থেকে থাকে তাহলে আপনি চাইলে আপনার ফেসবুক পেজের পোষ্ট গুলোকে বুষ্টিং করতে পারবেন এবং বুস্টিং করার মাধ্যমে আপনি যদি 500 টাকা ইনভেস্ট করে বুষ্টিং করেন তাহলে সেখান থেকে মোটামুটি আপনার 3000 থেকে 4000 টাকা লাভ আসবে বলে আশা করা যায় ।
4. নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে কোন ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন । আপনি চাইলে ব্লগার কিংবা ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন । তবে ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে এবং ব্লগারে আপনি চাইলে ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন ।
তৈরি করা হয়ে গেলে সেই ওয়েব সাইটে নিয়মিত পোস্ট করবেন । আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইটকে মুভি ডাউন লোডিং সাইট তৈরি করতে পারেন । যাতে করে ভালো মানের ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে এবং আপনি চাইলে বিভিন্ন এপস ওয়েবসাইটে আপলোড দিয়ে রাখতে পারেন ।
যাতে করে ডাউন লোড করার জন্য আপনার ওয়েবসাইটে আসবে । আমি রিকোমেন্ড করব আপনি একটা মুভি ডাউন লোড ওয়েবসাইট তৈরি করুন । এই ওয়েবসাইটগুলোতে অনেক ভিজিটর আসে প্রতিদিন ।
আপনি যদি আপনার এফিলিয়েট লিংক সহ প্রোডাক্ট এর ছবি দিয়ে রাখেন আপনার সাইটে তাহলে ওই ভিজিটরদের অনেকেই এই প্রোডাক্ট গুলো কিনতে পারে আপনার ঐ এফিলিয়েট লিংক থেকে । যাতে করে আপনার একটা ভিউজ পরিমাণ ইনকাম সেখান থেকে জেনারেট হয়ে যাবে ।
5. নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে
এটি এফিলিয়েট মার্কেটিং করার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি উপায় । আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে এবং সেখানে যদি যথেষ্ট পরিমাণ সাবস্ক্রাইবারস থেকে থাকে তাহলে আপনি চাইলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল দিয়েও আপনার লিংক গুলোকে প্রমোট করতে পারেন ।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আপনার ভিডিওতে ওই প্রোডাক্ট সম্পর্কে ডিটেইলস এ আলোচনা করতে পারেন এবং ডেসক্রিপশন বক্সে ঐটার লিংক দিতে পারেন । যাতে করে ভিউয়ার্সরা এই প্রোডাক্টটি কিনতে পারে আপনার ডিসক্রিপশন বক্স থেকে ।
আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে ভিডিও আপলোড করেন এবং একটি করে প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা করেন, তার সাথে ডেসক্রিপশন বক্সে লিঙ্ক দিয়ে রাখেন তাহলে আমি আপনাকে গ্যারান্টি দিতে পারি এই নিয়মে কাজ করতে পারলে আপনার মাসে ইনকাম গিয়ে দাঁড়াবে 40 থেকে 50 হাজার টাকা ।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে আপনি পড়েছেন এবং কোন কোন উপায় গুলো আপনি এপ্লাই করবেন সেগুলোও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পেরেছেন ।
এখন উপায় গুলো কে কাজে লাগিয়ে আপনি আফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করুন এবং ইনশাআল্লাহ একদিন সফলতা আসবেই । তবে প্রতিটা কাজে যেমন ধ্যর্যধারণ করতে হয়, তেমন একাজেও প্রথম অবস্থায় অবশ্যই একটু ধ্যর্যধারণ করতে হবে ।
যদি আমার এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং যদি আমার এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোন ধরনের-কোনো রকম প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন । আমি আপনাদের প্রতিটা কমেন্টে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব । পরবর্তী আর্টিকেলটি কি সম্পর্কিত পেতে চান তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন । ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ ।